মানুষের কষ্ট লাঘবে মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে — প্রধানমন্ত্রী 

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সবাইকে একযোগে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মানুষ কষ্ট করছে, তাদের কষ্ট লাঘবে মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা। এছাড়াও সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সিনিয়র সচিব ও সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে দেশের সব সেচ পাম্পে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ৮১ লাখ লিটার ডিজেল সেচ কাজে খরচ হয়। এর ব্যবহার কমাতে সেচ কাজে সোলার প্যানেল স্থাপন করা যেতে পারে। কেউ যদি বেসরকারিভাবে সোলার প্যানেল স্থাপন করতে চায় তাহলে কর মওকুফসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সৌর প্যানেল তৈরির সময় একটু উঁচু করে স্থাপন করতে হবে। এর নিচে বিভিন্ন সবজি, মসলা এবং মাছ চাষ করা যায় কি না- সে বিষয়টি দেখতে কৃষিমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেন তিনি।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে হাওড় অঞ্চলে শেড নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি অফিস বা প্রকল্প বাস্তবায়নে কম জমি ব্যবহারের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে পাইপ লাইনে বৈদেশিক সহায়তার ব্যবহার বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে সরকারপ্রধান বর্তমান ডলার সংকটে বৈদেশিক ঋণ বাড়ানো দরকার বলে জানিয়েছেন।

এদিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের আন্ডার পাসসহ মোট ১৬ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পগুলো বাস্তাবন ব্যয় হবে ২৪ হাজার ৩৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১২ হাজার ৮৭৩ কোটি ১১ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ থেকে ১১ হাজার ৪৭২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৬ কোটি ১৫ লাখ পাওয়া যাবে।

অনুমোদিত প্রকল্পসমূহ হলো- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ প্রকল্প; অর্থ মদ্যালয়ের বিসিএস (কর) একাডেমির ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (১ম পর্যায়) প্রকল্প; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প; সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে সুনামগঞ্জ-মদনপুর, দিরাই-শাল্লা জলসুখা-আজমিরীগঞ্জ হবিগঞ্জ মহাড়কের শাল্লা-জলসুখা সড়কাংশ নির্মাণ ও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পথচারী আন্ডারপাস প্রকল্প।

এছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের ইশ্বরদী-পার্বতীপুর সেকশনের স্টেশনসমূহের সিগন্যালিং ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প; যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘ইএআরএন’ প্রকল্প; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘খুরুশকুল বিশেষ আশ্রয়ন’ প্রকল্প; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণপ্রকল্প।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাতটি প্রকল্প যথাক্রমে তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (সেক্টর) প্রকল্প, ‘আইইউপিআইপি’ প্রকল্প; ব্ররাল কানেকটিভিটি ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরসিআইপি) প্রকল্প; চট্টগ্রাম বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প; গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর বাজার-চিলমারী উপজেলা সদর দপ্তরের সঙ্গে সংযোগকারী সড়কে তিস্তা নদীর ওপর ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প; রাজশাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প এবং নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।