মানি লন্ডারিং মামলায় জি কে শামীমের রায় পেছাল

যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীমসহ (জি কে শামীম) আটজনের বিরুদ্ধে করা মানি লন্ডারিং মামলায় রায় ঘোষণার তারিখ পেছানো হয়েছে। আজ রোববার রায় ঘোষণার দিন ঠিক ছিল। তবে আদালত আজ রায় ঘোষণা করেননি। আগামী ১৭ জুলাই রায় ঘোষণার নতুন দিন ঠিক করেছেন আদালত।

জি কে শামীমসহ আট আসামিই কারাগারে। আজ তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মো. নজরুল ইসলাম আজ এই আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী সরকারি কৌঁসুলি আজাদ রহমান প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

২০২০ সালের ৮ আগস্ট এই মামলায় শামীমসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ওই বছরের ১০ নভেম্বর আটজনের বিরুদ্ধে এই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযুক্ত অপর সাত আসামি হলেন—জি কে শামীমের দেহরক্ষী দেলোয়ার হোসেন, মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, সামসাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।

রাজধানীর গুলশান থানার এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করে। এই মামলায় ১৫ জুন রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সেদিন আদালত রায় ঘোষণার জন্য আজ দিন ঠিক করেছিলেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, দেশের ১৮০টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩৩৭ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে শামীমের। এ ছাড়া ঢাকায় দুটি বাড়িসহ প্রায় ৫২ কাঠা জমির মালিক তিনি। এসবের দাম ৪১ কোটি টাকা। শামীম তাঁর অস্ত্রধারী সাত দেহরক্ষীকে দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টেন্ডারবাজি, বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটে চাঁদাবাজি করে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন।

মামলার তদন্তভার পাওয়া সিআইডির কর্মকর্তা আবু সাঈদের ভাষ্য, শামীমের স্থায়ী আমানত ৩৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার ৪০৬ টাকার ওপর আদালতের স্থিতাদেশ রয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার মার্কিন ডলার ও ৭৫২ সিঙ্গাপুরি মুদ্রা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় দুটি বাড়িসহ তাঁর ৫১ দশমিক ৮৩ কাঠা স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে। এগুলোর দলিলমূল্য ৪০ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ২০০ টাকা।

২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে নিজ কার্যালয় থেকে সাত দেহরক্ষীসহ শামীম গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তারের আগে শামীম কখনো নিজেকে যুবলীগের সমবায়বিষয়ক সম্পাদক আবার কখনো নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে পরিচয় দিতেন। সামনে-পেছনে সাতজন সশস্ত্র দেহরক্ষী নিয়ে তিনি চলাফেরা করতেন।

শামীমের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। এর মধ্যে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।