মাদারীপুরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৬

ভূমিকম্প ও সুনামিতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি শোধন করে সমুদ্রে নিষ্কাশনের জন্য জাতিসংঘ আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) অনুমতি পেল জাপান। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং স্থানীয় কিছু অধিবাসীর তীব্র বিরোধিতার পরও এই অনুমতি এল।

বিষয়টি নিয়ে দুই বছর পর্যালোচনার পর আইএইএ বলেছে, জাপান ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়ার যে পরিকল্পনা করেছে, তা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার মানদণ্ড অনুযায়ীই করা হয়েছে। এতে মানুষ ও পরিবেশের ওপর তেমন ক্ষতিকর কোনও প্রভাব পড়বে না।

ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি জমা রাখার জায়গা শেষ হয়ে আসছে। এই পানি পারমাণবিক চুল্লি শীতলীকরণে ব্যবহার হত। আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি মঙ্গলবার জাপানকে পানি সাগরে ফেলার ছাড়পত্র দিয়েছেন।

জাপানের প্রেস ক্লাবে ছোটখাট একটি গোষ্ঠীর বিক্ষোভের মুখে সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়া নিয়ে চলে আসা উদ্বেগ দূর করার চেষ্টা করবেন তিনি। পানি ছাড়া প্রক্রিয়া দেখভালের জন্য আইএইএ’র একজন কর্মীকে ফুকুশিমা কেন্দ্রে রাখা হবে।

আগে এ ধরনের ঘটনা যে ঘটেনি সেটি আমাদেরকে স্বীকার করতে হবে উল্লেখ করে গ্রোসি বলেন, পানি সাগরে ছাড়ার ব্যাপারে শেষ সিদ্ধান্তটি জাপানই নেবে। এ কাজ শুরু হতে প্রায় তিন/চার দশক লাগবে।

তাছাড়া, পানি সাগরে ছাড়ার আগে তাতে ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী কোম্পানি টেপকোর অনুমোদনও দরকার হবে। টেপকোর চূড়ান্ত অনুমোদন এ সপ্তাহেই আসতে পারে। যদিও পানি কবে ছাড়া হবে সে ব্যাপারে কোনও ঘোষণা এখনও দেয়নি জাপান।

২০১১ সালের ১১ মার্চ ভয়াবহ এক ভূমিকম্প এবং এ থেকে সৃষ্ট সুনামির বিশাল জলোচ্ছ্বাসে জাপানের ফুকুশিমায় অবস্থিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির চারটি পারমাণবিক চুল্লি প্লাবিত হয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

ফুকুশিমার ওই বিপর্যয়কে তুলনা করা হয় ইউক্রেইনের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার সঙ্গে। দুটি বিপর্যয়েই প্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জীবন বিপন্ন হওয়ায় আশেপাশের এলাকা থেকে লাখো মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

ফুকুশিমার তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ছাড়ার বিষয়টি প্রথম ২০২১ সালের অনুমোদন করে জাপান সরকার। ওই সময় জাপান সরকার বলেছিল, তেজস্ক্রিয় ১০ লাখ টন পানি শোধন করে পর্যায়ক্রমে সাগরে ফেলা হবে।

পারমাণবিক চুল্লি ঠান্ডা রাখতে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় পানি প্রতিদিনই ফিল্টার হয়ে ট্যাংকে সঞ্চিত হচ্ছে। সাগরে ফেলার আগে এই পানিতে থাকা তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ বেশিরভাগই দূর করা হয়েছে। তবে ট্রিটিয়ামের মাত্রা এখনও নিরাপত্তার জাতীয় মানদণ্ডের ওপরে আছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা কোম্পানি টেপকো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রিটিয়াম পানি থেকে আলাদা করা খুব কঠিন এবং এর মাত্রা বেশি থাকলেই কেবল তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।ফলে সাগরে পানি ছাড়ার আগে এই ট্রিটিয়ামকে পাতলা করে বিপজ্জনক মাত্রার নিচে নামাতে হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।