ছুটি আর বৃষ্টিতে বেড়েছে ডেঙ্গু ঝুঁকি

মশককর্মীর জন্য প্রবেশ করা কঠিন। নগরবাসীকে সম্পৃক্ত না করতে পারলে এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দেওয়া মুশকিল। ডেঙ্গুর হটস্পটগুলোকে (বেশি সংক্রমণ এমন এলাকা) আলাদা গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।

দক্ষিণ সিটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে শামসুল কবির কালবেলাকে বলেন, ছাদবাগান নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে। প্রতিদিনকার পানি প্রতিদিনই পরিষ্কার করতে হবে। এটা না করার কারণে ছাদবাগান অনেকের জন্য মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, দোকানপাট যেখানেই হোক কোনোভাবেই এক দিনের বেশি কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না। আমাদের সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নির্মাণাধীন ভবন ও বেজমেন্ট, সেখানে সবচেয়ে বেশি লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। জরিমানা করছি, সতর্ক করছি। সামনে আমরা আরও কঠোর পদক্ষেপ নেব।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, এ বছর এডিস মশা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। এডিস মশা উন্মুক্ত জায়গায় পানি জমে থাকলে সেখানে ডিম ছাড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এডিস মশার বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি হচ্ছে, আবার রোদ উঠে যাচ্ছে। তিন দিন পানি জমে থাকলে সেখানে এডিস মশার লার্ভা হয়ে যাচ্ছে। এখন আর বলছি না যে, ‘তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন।’ এখন বলছি, প্রতিদিন জমা পানি ফেলে দিন।

দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ২০১৯ সালে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাক-বর্ষা জরিপের তথ্য বলছে, এবারের পরিস্থিতি ২০১৯ সালের চেয়েও কয়েক গুণ খারাপ। গত ১৭ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত এবারের প্রাক-বর্ষা জরিপ চালানো হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৪০টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫৮টি ওয়ার্ডে গেছেন জরিপকারীরা। এসব ওয়ার্ডের ৩ হাজার ১৪৯টি বাড়ি পরিদর্শন করে ৫৪৯টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ডিএনসিসির ২৭১ এবং ডিএসসিসির ২৭৮টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এবার বহুতল ভবনে (প্রায় ৪৪ শতাংশ) এডিস মশার লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। এরপর সবচেয়ে বেশি লার্ভা (প্রায় ৪০ শতাংশ) পাওয়া গেছে একক বাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে। এসব স্থানে পানি জমে থাকা ভেজা মেঝে, প্লাস্টিক ড্রাম ও পাত্র এবং ফুলের টবে লার্ভা বেশি ছিল।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।