খুলনা সিটি নির্বাচন মেয়র ছাপিয়ে আলোচনায় কাউন্সিলর প্রার্থীরা

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের ছাপিয়ে আলোচনায় কাউন্সিলর প্রার্থীরা। আজ মধ্যরাতে এ সিটিতে আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রৌদ্র-বৃষ্টি উপেক্ষা জমজমাট প্রচার চালান কাউন্সিলর প্রার্থীরা। নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কাউন্সিলর প্রার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল ও শোডাউন করেন। শেষ সময়ে নিজ নিজ জনসমর্থন জানান দিতে নারীদের রাস্তায় নামিয়েছেন বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী। দিচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি।

এদিন প্রধান তিন মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক, জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম মধু এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়ালও প্রচার চালান। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীদের তুলনায় মেয়র প্রার্থীদের প্রচার ও তৎপরতা অনেক কম ছিল। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর সামনে শক্ত প্রার্থী নেই। মেয়র পদে আবারও জয় পাওয়ার বিষয়ে অনেকটাই নির্ভার তালুকদার আব্দুল খালেক। এ কারণে মেয়র পদ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রচার ও আগ্রহ দুটোই কম।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, এ নির্বাচনে ৫০ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে আসবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও একই শঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি যেতে নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, জেলা ও নগর নেতারা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা যুগান্তরকে বলেন, ‘কয়েকটি ওয়ার্ডে একাধিক শক্ত কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। জয় পেতে তারাই নির্বাচনি মাঠ সরগরম করে রেখেছেন। কিন্তু নির্বাচনের মূল কেন্দ্র মেয়র প্রার্থী নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ নাই বললেই চলে। ভোটের আগেই মেয়র পদে ফলাফল কী হতে যাচ্ছে তা ভোটাররা আগভাগেই অনুমান করছেন। এ কারণে এ সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে।’

ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার আশঙ্কা খোদ সরকারি দলেও রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনায় অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সবসময় নির্বাচনবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ কারণে মানুষের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তবে আমরা নেতাকর্মীদের বলেছি, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। বেশি সংখ্যক ভোটার যাতে কেন্দ্রে যান সেই আবহ তৈরি করতে হবে। মানুষকে নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আশা করছি খুলনায় অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হবে। বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র এ নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারবে না। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবেন।’

আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মেয়র পদের চেয়ে পছন্দের কাউন্সিলর প্রার্থী জয়ী করতে প্রকাশ্য ও গোপনে কাজ করছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা। কয়েকটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে। একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা ছড়ানোসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করছেন।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।