বরিশালে হাতপাখার মেয়র প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুর

ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) বরিশালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাতপাখা প্রতীকে মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিমের গাড়িতে ভাঙচুর ও তার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর নৌকার কর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া ৮টি কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম। সোমবার (১২ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি এসব অভিযোগ করেন

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীর নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির মিডিয়া সেলের সদস্য কেএম শরিয়তুল্লাহ জানান, “২নং ওয়ার্ডের কাদের চৌধুরী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হাতপাখার কর্মীদের মারধরের অভিযোগের খবর পেয়ে প্রার্থী মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম উপস্থিত হলে তার গাড়িতে ভাঙচুর ও সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলা চালায় নৌকার কর্মীরা। এছাড়া ২নং ওয়ার্ডের শেরেবাংলা দিবা-নৈশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পোলিং এজেন্টের কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে। ৬নং ওয়ার্ডের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ওজোপাডিকা-২ (ওয়াপদা অফিস) আমানতগঞ্জে পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেয়নি। ১নং ওয়ার্ডের সৈয়দুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ কর্মীরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ৭নং ওয়ার্ডের আসমত মাস্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাউনিয়া সেকশন রোড কেন্দ্রের বাইরে হাতপাখার ক্যাম্প ভেঙে দিয়েছে এবং কেন্দ্রের ভেতরে হাতপাখায় ভোট দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ২৬নং ওয়ার্ডের হরিণাফুলিয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহিলা ভোটারদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে নৌকায় জোরপূর্বক ভোট দিয়ে দিচ্ছে। এ কাজ করছে স্থানীয় কাউন্সিলের মেয়ে।”

“এছাড়া ২৫নং ওয়ার্ডের আব্দুল ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইভিএম নষ্ট। ২২নং ওয়ার্ডের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কেন্দ্রে হাতপাখার মহিলা কর্মীদের সেন্টারের কাছাকাছি ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না।”

তিনি আরও জানান, “এসব বিষয়ে প্রিসাইডিং ও পুলিশকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমন পরিস্থিতিতে কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে তা পরবর্তীতে জানানো হবে।”

এদিকে, ভোটকেন্দ্রে ও নগরে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাড়ে ৪ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।

তিনি জানান, প্রতিটি কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ১২ জন আনসার সদস্যসহ ৬-৭ জন পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া পুলিশের মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স, র‌্যাবের ১৬টি স্ট্রাইকিং টিম, র‌্যাব-পুলিশের গোয়েন্দা টিমের সদস্যরা নগরজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন। এছাড়া টহলের পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে চেকপোস্টও বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এর পাশাপাশি ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ প্লাটুন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করছে বলে জানিয়েছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

উল্লেখ্য,বরিশালের এবারের সিটি নির্বাচনে ১১৮ জন সাধারণ ও ৪২ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী মিলে মোট ১৬৭ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।