খেতে পারবেন যতটুকু

হিসেবে যদি বলি তাহলে, যার ডায়াবেটিস আছে তিনি যদি কেটো ডায়েট ফলো করেন, তাহলে হাইপোগ্লেসেমিক হয়ে স্ট্রোক করতে পারেন। তাই ডায়েটের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে অবশ্যই। এ বিষয়ে কোনো পেশাদার নিউট্রিশনিস্ট বা ডায়েশিয়ানের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তারা সব বিষয় খেয়াল রেখে ডায়েট প্ল্যানটা তৈরি করে। ডায়েট প্ল্যান একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। এ ছাড়া যিনি ডায়েট প্ল্যান দিচ্ছেন তাকে অবশ্যই এ বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান এবং দক্ষ হতে হবে।

এদিকে কোরবানি ঈদ মানেই মাংসের নানা পদের সমারোহ থাকে চারদিকে। সঙ্গে পোলাও এবং বিভিন্ন মিষ্টান্ন তো থাকেই। তবে খাবার দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়লে চলবে না। মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন সুমাইয়া রফিক। তিনি বলেন, একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ ৭৫ থেকে ১০০ গ্রাম মাংস খেতে পারে। টুকরোর হিসাব করলে তিন-চারটি। গরুর ঘাড় এবং রানের মাংসে সবচেয়ে কম ফ্যাট থাকে, তাই এ অংশ বাদে অন্যান্য অংশের মাংস রান্নার আগে ভালোভাবে চর্বি ছেটে নিতে হবে। গরুর মাংস খাওয়ার পর তা হজম হতে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে, তাই অতিরিক্ত মাংস খেলে ইনডাইজেশন, অ্যাসিড রেফ্লাক্স এবং জিআইজি ইনফ্লামেশন হতে পারে। তাই হজমের জন্য গরুর মাংসের সঙ্গে বেশি বেশি সবজি খেতে হবে। ইসপগুলের ভুসি, চিয়া সিডস ও তোকমা দানা ডায়েটে রাখা যেতে পারে। যাদের কোলেস্টেরল ও হাইপ্রেশার আছে তাদের কোনোভাবেই দিনে ৫০ গ্রামের বেশি গরুর মাংস খাওয়া উচিত নয়। যাদের কিডনি সমস্যা আছে তারা ছোট এক টুকরোর বেশি কোনোভাবেই খেতে পারবেন না। খেয়াল রাখতে হবে, সুস্থ ব্যক্তিও অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে ইউরিক অ্যাসিড লেভেল বেড়ে যেতে পারে এবং বাতের ব্যথা দেখা দিতে পারে। বাচ্চাদেরও এ গরমে গরুর মাংস না দেওয়াই ভালো। তবে দিনে একবেলা দেওয়া যেতে পারে।

ঈদের রান্নায় নানারকম মসলার ব্যবহার অন্যান্য সময়ের তুলনায় একটু বেশিই হয়ে থাকে। এ গরমে মসলা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে এ নিউট্রিশনিস্ট বলেন, গুঁড়া মসলা না খেয়ে দই, কাটা মসলা, কাঁচামরিচ, ক্যাপসিকাম, টমেটো, রসুন দিয়ে রান্না করলে ভালো। সুস্থ থাকার জন্য খাবারে অতিরিক্ত লবণ, চিনি, তেল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। কোরবানির সময় মাংস খাওয়া হবে তাই আগে থেকেই হালকা-পাতলা খাওয়া শুরু করা ভালো। তাহলে ভালোভাবে কোরবানি ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। বেশি বেশি পানি, লেবুপানি, আদা বা দারচিনি দিয়ে ফুটানো পানি খেলে তা পেটের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এ ছাড়া কোরবানির পরপরই মাংস রান্না না করে চার-পাঁচ ঘণ্টা পর রান্না করলে তা হজমের জন্য ভালো। ফ্রিজে দুই-তিন মাসের বেশি কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করা যাবে না। যদি মাংস থেকে কোনো কারণে গন্ধ আসে তাহলে তা রান্না না করাই ভালো।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।