নতুন বাজেট কার্যকর হচ্ছে আজ

চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) নতুন বাজেট আজ শনিবার (১ জুলাই) থেকে কার্যকর হচ্ছে। গত ২৬ জুন ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক এ বাজেট পাস হয়।

সরকারের টানা তিন মেয়াদের ১৫তম বাজেট এটি এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৪তম বাজেট। এ ছাড়াও এ বাজেট সরকারের চলতি মেয়াদের শেষ এবং বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। আর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের উত্থাপিত পঞ্চম বাজেট এটি।

প্রতিবছর ৩০ জুন তথা আগের অর্থবছরের শেষ দিন বাজেট পাস হলেও এ বছর ঈদুল আজহার ছুটির কারণে এবার আগেই পাস করা হয় নতুন বাজেট।

এবার বাজেটের ওপর সংসদে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, গণফোরাম ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ১০ জন সংসদ সদস্য মোট ৫০৩টি ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন। অন্যান্য বছর সব প্রস্তাবের ওপর আলোচনা না হলেও গুরুত্বপূর্ণ ১০ থেকে ১৫টি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ নিয়ে সংসদে আলোচনা করেন বিরোধীদলীয় সদস্যরা।

কিন্তু এবার নজিরবিহীনভাবে দুটি ছাড়া আর কোনো মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সুযোগ পাননি তারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সাস্থ্যসেবা বিভাগের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। সব প্রস্তাবই কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বাকি সব মন্ত্রণালয়ের ছাঁটাই প্রস্তাব স্পিকার তার ক্ষমতাবলে সরাসরি ভোটে দেন।

এর আগে গত ১ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপন করা হয়। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র লক্ষ্য। তাই এবারের বাজেটে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী ভৌত, সামাজিক ও প্রযুক্তি অবকাঠামো বিনির্মাণের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে করে স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার এবং সর্বোপরি স্মার্ট অর্থনীতি গঠনের পথ সুগম হয়।

নতুন অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে সীমিত রেখে সাড়ে ৭ শতাংশ ধরা হয়েছে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা।

এবারের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার কোটি টাকা, কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা, আর বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। একই সময়ে আয়ের প্রাক্কলন হচ্ছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এ বাজেটের ঘাটতি ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

এ ঘাটতি পূরণে সরকার কোন খাত থেকে কত টাকা ঋণ নেবে, তারও একটি ছক তৈরি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ ঋণ নেবে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণ হিসেবে নেবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।