নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করবে গণঅধিকার পরিষদ

আগামী ২৫ জুলাই নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছে নুর-রাশেদের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পদযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এ সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) নিবন্ধন নিয়ে প্রশ্ন তুলেন নেতারা। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় রাজনৈতিক দল হিসেবে দলগুলোর চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

নুরুল হক নুর বলেন, সরকার আবারও ‘১৪ ও ১৮’ এর মতো একটা নির্বাচন নির্বাচন খেলা আয়োজন করতে চাচ্ছে। কিন্তু মাঠ সমতল না করে, নিরপেক্ষ রেফারি ঠিক না করে কোনো সাজানো-পাতানো নির্বাচনে আমরা যাব না।

নুর বলেন, ‘১৪ ও ১৮’ সালে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অবৈধভাবে গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করেছে। আমরা কোনো সংঘাত-সহিংসতা চাই না। সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদ নিয়ে সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থা ষড়যন্ত্র করছে-এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা অফিস মালিককে দিয়ে গতকাল (সোমবার) গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করেছে, মিটার খুলে নিয়েছে। এর আগে কিছু দলছুট নেতাকে ব্যবহার করে গণঅধিকার পরিষদ ভাঙার ষড়যন্ত্র করেছে, ব্যর্থ হয়ে এখন তাদের দিয়ে গণঅধিকার পরিষদকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা ধরনের অপপ্রচার ও প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। একজনকে দিয়ে মামলা করিয়েছে। এগুলো করে তারুণ্যের শক্তিকে থামানো যাবে না। আমরা আরও দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাব।

নুর আরও অভিযোগ করেন, শর্তপূরণের পরও গণঅধিকার পরিষদসহ সক্রিয় দলগুলোকে নিবন্ধন না দিয়ে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় গড়ে ওঠা দুটি নামসর্বস্ব দলকে নিবন্ধনের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়েছে- নতুন দুটি ভুঁইফোড় দলের অফিস নিয়ে দিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা। জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির লোক দিয়ে। সরকার আরেকটি ‘১৪ ও ১৮’ মার্কা নির্বাচন করার জন্য এমন নামসর্বস্ব দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন আর কমিশন নেই, তারা সরকারের দালালি ও দাসত্ব করে যাচ্ছে। আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সব নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ চাই।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ হিরো আলমকে ভয় পেতে শুরু করেছে। হিরো আলমও আজ তাদের আতংকের কারণ। জনগণ রাস্তায় নামলে তারা পালানোর পথ পাবে না।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিকেল সোয়া ৪টায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ে গণঅধিকার পরিষদের উদ্যোগে এই পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়।

তবে পুলিশের বাধায় কাকরাইল, মালিবাগ হয়ে মগবাজার মোড়ে গিয়ে পদযাত্রা শেষ হয়।

পদযাত্রা কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন-গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিলউজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতেমা তাসনিম, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন, যুগ্ম সদস্যসচিব মশিউর রহমান, গণপরিষদ নেতা আনিসুল ইসলাম মুন্না, রফিকুল ইসলাম, কামরুন নাহার, শাকিল আহমেদ, নাজিম উদ্দিন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদসহ নেতাকর্মীরা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।