ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট আছে সপ্তাহ দুয়েকের

চলতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ ব্যাপক বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে প্রাণঘাতী এই রোগ শনাক্তকরণ কিটের ব্যবহার। এতে ঢাকার বাইরে অনেক হাসপাতালেই কিট সংকটের কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) পৌঁছেছে ২১০০ কিট, যা দিয়ে অন্তত ১০ দিনের প্রয়োজন মিটবে। অন্যদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, তাদের কাছে যে পরিমাণ কিট আছে, তাতে অন্তত ১৫ দিন চলবে। এ অবস্থায় আগামী সপ্তাহেই নতুন কিট সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান কালবেলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ২ হাজার ১০০ কিট এসেছে। এগুলো দিয়ে আরও বেশ কয়েকদিন চলবে। তা ছাড়া চমেক হাসপাতালে নতুন করে ডেঙ্গু ওয়ার্ড চালু হয়েছে। স্যালাইন, ওষুধসহ যাবতীয় সরঞ্জাম পর্যাপ্ত মজুত আছে।’

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে নতুন করে ৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন মনোয়ারা বেগম নামে এক নারী।

চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও কাউন্সিলর জহুর লাল হাজারী কালবেলাকে বলেন, ‘ডেঙ্গুর প্রকোপ না কমা পর্যন্ত চসিকের উদ্যোগে ফ্রিতে ডেঙ্গু টেস্ট অব্যাহত রাখা হবে। চসিক জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু টেস্ট বিনামূল্যে করা হচ্ছে। মাত্র ১১০ টাকায় প্লাটিলেট টেস্ট করানো হচ্ছে। কিটের সংকট নেই।’

এদিকে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে নতুন করে কিট সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় কিট নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত বিভাগের ছয় জেলার দুটি মেডিকেল কলেজ, ছয়টি জেলা সদর হাসপাতালসহ অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে মোট ৬ হাজার ১৬৬ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৯০২ ডেঙ্গু রোগী।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, যেসব রোগী ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসছেন, তাদের সবার আগে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে দেওয়া হচ্ছে। গণহারে পরীক্ষা করার কারণে মজুত থাকা কিটের সংখ্যা কমে আসছে। বর্তমানে আমাদের কাছে যে পরিমাণ কিট মজুত আছে, তা দিয়ে সর্বোচ্চ ১৫ দিন যাবে। তবে তার আগেই আগামী শনিবার অথবা রোববারের মধ্যে কিট সরবরাহ করা হবে।

ডেঙ্গুপ্রবণ দ্বীপজেলা ভোলার সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম শফিকুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, ‘শুধু ভোলা জেলাতেই নয়, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি বাংলাদেশের সব জেলাতেই ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট ফুরিয়ে আসছে। আমাদের জেলায় প্রতিদিন ৩০-৪০ জনের বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান কালবেলাকে বলেন, ‘যে কিট মজুত আছে, তা দিয়ে এখনো এক থেকে দেড় সপ্তাহ পর্যন্ত পরীক্ষা করা যাবে। এ কিটগুলো গত অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। এখন নতুন করে কিট সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ জন্য মন্ত্রণালয়ে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।