বেতাগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশের অভিযোগ

বেতাগী বরগুনা সংবাদদাতা ঃ বরগুনার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও সেবিকাদের অবহেলায় একাধিক রোগীর শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর রায়হান হোসেন (১৪)এবং ইসমাইল হোসেন (২৯) নামে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর দেহে মেয়াদোত্তীর্ণ সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইনজেকশন পুশ করা হয়। এতে রোগীরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। রোগী আদৌ সুস্থ হবেন কি না এ নিয়ে স্বজনদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে।এ ঘটনায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা যায়, গত রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ইউনিট বি-৭-এ ভর্তি হন মির্জাগঞ্জের কাঁকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রায়হান হোসেন (১৪)। প্রচণ্ড জ্বর, কাশি ও বুকে ব্যথা নিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে ছিলেন তিনি অন্য রোগী বেতাগী সদর ইউনিয়নের ভোলানাথপুর গ্রামের জয়নাল খানের ছোট ছেলে ইসমাইল হোসেন প্রচন্ড জ্বর নিয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হন। রোগীর স্বজনদের বক্তব্যে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর রোগীর স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হয়নি। বরং রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে অ্যান্টিবায়োটিক সিপ্রোফ্লক্সাসিনের নাম লিখে দেন এবং ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী দায়িত্বরত সেবিকারা প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুটি করে এই ইনজেকশন পুশ করেন। রোগী রায়হানের স্বাস্থ্যের সুস্থতার পরিবর্তে অবনতি হলে তার বাবা আব্দুর রাজ্জাকের সন্দেহ হয়। ভুক্তভোগী রোগী রায়হান হোসেনের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রোগীকে মেয়াদোত্তীর্ণ পরপর সাতটি সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইনজেকশন পুশ করা হয়। এতে রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনি আরো বলেন, রায়হান পুনরায় সুস্থ হবে কি না, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সেবিকাদের ওষুধ বহনের ট্রে-তে মেয়াদোত্তীর্ণ সিপ্রোফ্লক্সাসিন ছিল। দায়িত্বরত সেবিকা মানছুরা আক্তার অসাবধানতাবশত রায়হানের মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন পুশ করেন, যার ব্যাচ নম্বর জেড-২০.০৫.১০৩, উৎপাদন তারিখ ২০২০-এর মে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ২০২৩-এর এপ্রিল উল্লেখ ছিল। এতে রোগী রায়হান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ বিষয়ে দায়িত্বরত সেবিকা মানছুরা আক্তার ভুল শিকার করে বলেন, সেবিকাদের ওষুধ বহনের ট্রেতে আগে থেকেই সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইনজেকশন ছিল। তবে অসাবধানতার কারণে মেয়াদোত্তীর্ণ সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে। এ জন্য আমরা দুঃখিত। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্কর বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান। সঠিক তদন্তপূর্বক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।