চলতি মাসেই আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে’

দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এরইমধ্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এমনকি গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চলতি মাসেই আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংগঠন জানিপপের চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।

শনিবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক অনুষ্টানে এ কথা জানান তিনি।

নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আজকে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দল ঢাকা এসে পৌঁছেছে এবং তারা আগামী ১২ তারিখ পর্যন্ত তাদের নির্বাচনী মূল্যায়ন পর্যবেক্ষণ করবেন। ফিরে গিয়ে তারাও তাদের মতামত ব্যক্ত করবেন।তিনি বলেন, কিছুদিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ ঢাকা এসেছিলেন। তিনি পররাষ্ট্র সচিবকে সঙ্গে নিয়ে যেটি জানিয়েছিলেন তা হলো, এই স্যাংশন হতে পারে দুর্নীতি নিবারণের বড় হাতিয়ার। আর তার টেস্ট কেস হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক থেকে তার (নেফিউ) একটি বই প্রকাশিত হয়েছে, ‘দ্য আর্ট অব স্যাংশনস’। তার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই বইটি লিখেছেন তিনি।

জানিপপের চেয়ারম্যান বলেন, পৃথিবীর সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্র হলো বাংলাদেশ। স্যাংশনের বড় একটি মডেল হতে যাচ্ছে এ দেশটি। নেফিউ যা বলতে চেয়েছেন তার উদ্দেশ্য দুটি। কেন স্যাংশন আরোপ করা হচ্ছে এর একটি হলো- পেইন; যাতে আপনি ব্যথা অনুভব করেন। আরেকটি হলো- রিজার্ভ। অর্থাৎ মার্কিনীদের রিজার্ভ রয়েছে, তা যেনো আমরা অনুভব করতে পারি। এই বিবিধ চিন্তা নিয়ে তারা স্যাংশন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে এবং এই মাসেই আরও কিছু নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এ বিষয়ে দৈনিক কালবেলার প্রধান সম্পাদক আবেদ খান একটি সম্পাদকীয় লিখেছেন ‘আসছে মার্কিনি ঝড়’। এই ঝড় কতদূর প্রভাব বিস্তার করে এবং কাকে কোথায় নিয়ে ফেলে তা কেউ জানে না।

তিনি বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন যে ভিসীনীতি ঘোষণা করেছেন এবং পরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার তা কার্যকর করার প্রক্রিয়া যে শুরু হয়েছে, সেটি জানিয়েছেন। তারওপরে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেছেন, ‘অ্যানি অন, ক্যান বি ইনক্লুডেড’। অর্থাৎ তাত্ত্বিকভাবে সবাই কিন্তু এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন। এর মূল বিষয়টা হচ্ছে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক শান্তিপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন।

কলিমউল্লাহ বলেন, আটলান্টিকের এপারে ব্রিটেন যে অংশটা নিয়ে কাজ করছেন তা হলো- অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। আর ওপারে মার্কিনীরা বলতে চেষ্টা করছেন, ইনক্লুসিভ অর্থ্যাৎ অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন। এই যে প্রত্যয়গুলো তারা হাজির করেছেন তা যদি পূরণ না করা যায়, তাহলে কিন্তু নির্বাচনটি অবশ্যই হবে ত্রুটিপূর্ণ। এতে লেজিটিমেটি সংকট কিন্তু কাটবে না। ১৪ এবং ১৮ তে যেভাবে বৈতরণী পার হওয়া গেছে, কোনো অবস্থায় এই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন তেমনটি হবে না। এটি নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ আছে বলে আমার মনে হয় না। শাসক দলেরও অনেকে সচেতনভাবে বা অবচেতনভাবে মাথায় নিয়েছেন। ইউরোপের ২৭টি দেশ এবং ব্রিটেন, কানাডা, ইউএসএ, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াসহ ৩২টি দেশ একত্রে কথা বলা শুরু করবে এবং কথা অনুযায়ী কাজ করা শুরু করবে। তখন সমগ্র বিশ্বের বিরুদ্ধে টিকে থাকা কঠিন, সুতরাং সাধু-সাবধান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।