ক্ষমতা বাড়ল ভ্যাট কর্মকর্তাদের

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বাড়ল। ভ্যাটের কোনো নথি যাচাই–বাছাই করার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের জন্য আর্থিক মূল্যের সীমা বাড়ানো হয়েছে।

বিষয়টি কীভাবে হবে, তা ব্যাখ্যা করা যাক। একজন ভ্যাটদাতার (প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি) পণ্যমূল্য বা সেবা বিক্রির পরিমাণ ১৫ লাখ টাকা। ভ্যাট রিটার্নে তিনি তা–ই দেখিয়েছেন। এত দিন এই নথি যাচাই–বাছাই করতে হলে উপকমিশনারের কাছে যেতে হতো। এখন থেকে এই নথি একজন সহকারী কমিশনার নিজেই যাচাই–বাছাই করতে পারবেন। আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়েছে কি না কিংবা মিথ্যা ঘোষণা দিয়েছেন কি না, তা দেখবেন সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কর্মকর্তা। এরপর কোনো বিরোধ থাকলে তা মীমাংসা করবেন।

কর্মকর্তাদের ভ্যাট–সংক্রান্ত অভিযোগ মীমাংসা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এভাবে চলতি বাজেটে ছোট ছোট পদবির ভ্যাট কর্মকর্তাদের এ ধরনের ক্ষমতা আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এসব প্রস্তাব করা হয়েছে।
এবার দেখা যাক, কার ক্ষমতা কতটা বাড়ল—

বিরোধ দেখা দিলে ভ্যাটের রাজস্ব কর্মকর্তারা আগে চার লাখ টাকা পর্যন্ত পণ্য বা সেবা বিক্রির নথি যাচাই–বাছাই করতে পারতেন। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, এখন থেকে রাজস্ব কর্মকর্তারা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনার সম্পৃক্ততা আছে, এমন নথি যাচাই–বাছাই করতে পারবেন।

এ ক্ষেত্রে সহকারী কমিশনারদের ক্ষমতা দ্বিগুণ করা হয়েছে। এখন থেকে তাঁরা ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনার সম্পৃক্ততা আছে, এমন নথির মীমাংসা করতে পারবেন। উপকমিশনারদের ক্ষমতা ছিল ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নথি। এখন তা বাড়িয়ে ৩০ লাখ টাকা করা হয়েছে। যুগ্ম কমিশনারদের ক্ষমতা ৩০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকার নথি করা হয়েছে।

অন্যদিকে অতিরিক্ত ভ্যাট কমিশনাররা আগে ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনার সম্পৃক্ততা আছে, এমন ভ্যাটের নথি যাচাই করতে পারতেন। এখন তা বাড়িয়ে এক কোটি টাকা করা হয়েছে। আর এক কোটি টাকার বেশি ফাঁকির অভিযোগ থাকলে কমিশনারের কাছে যেতে হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এতে অপেক্ষাকৃত ছোট পদবির ভ্যাট কর্মকর্তারা ভ্যাট ফাঁকি–সংক্রান্ত যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারবেন। একদিকে এর সুবিধা হলো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমবে। অন্যদিকে অসুবিধা হলো বড় বড় ভ্যাটের নথি ছোটখাটো কর্মকর্তাদের কাছে আটকে থাকার প্রবণতা বাড়তে পারে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।