ঝুট ব্যবসায়ী থেকে ‘পল্লবীর জমিদার’ কাউন্সিলর বাপ্পি

রাজধানীর পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পি। পরিবহনে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে গার্মেন্টের ঝুট কাপড়, ডিশ, ইন্টারনেট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, ফুটপাত-সড়কে অস্থায়ী বাজার ও দোকান বসিয়ে চাঁদা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। চলাফেরা করেন বিলাসবহুল গাড়িতে। সামনে পেছনে থাকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকারের বহর। প্রভাব-প্রতিপত্তিতে পল্লবীর সমসাময়িক সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়া এই ব্যক্তি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। এক সময় এলাকায় পরিচিত ছিলেন ঝুট বাপ্পি নামে। তবে এখন ‘পল্লবীর জমিদার’ নামে ডাকা হয় তাকে।

ঢাকার কর অঞ্চল-৩-এর সার্কেল ৪৯-এর নিবন্ধিত করদাতা বাপ্পি। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের হলফনামার তথ্য বলছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় মিল্ক ভিটা রোডে ৭০০ বর্গফুটের সেমিপাকা টিনশেড বাড়ির মালিক ছিলেন বাপ্পি। সাড়ে ৯ কাঠার আবাসিক প্লটের ওপর নির্মিত সেই টিনশেড বাড়িটি এখন আর নেই। সেখানে দাঁড়িয়ে আছে তিনতলা ভবন, নাম ‘চৌধুরী ভিলা’। হলফনামা দেওয়ার সময় কোনো গাড়ি না থাকলেও এখন ব্যবহার করেন হ্যারিয়ার জিপ। এ ছাড়া আরও তিনটি গাড়ি আছে তার। এগুলো ব্যবহার করেন পরিবারের সদস্যরা।

স্মার্ট ফ্যাশন নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও মালিক তিনি। এ ছাড়া ৫০ বিঘা জমির ওপর বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মেসার্স চৌধুরী অ্যান্ড খান ব্রিকস নামে অটো ব্রিকফিল্ড করেছেন। রাজধানী ও মোরেলগঞ্জে আছে বিস্তর সম্পদ। সবশেষ আয়কর নথিতে এসব উল্লেখ না থাকলেও ‘কালবেলা’র অনুসন্ধানে উঠে এসেছে তার সম্পদের তথ্য।

অবশ্য এত সম্পদ থাকার তথ্যকে ষড়যন্ত্র দাবি করে কাউন্সিলর বাপ্পি বলেন, ‘আমার তেমন কিছুই নেই। সব ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রচারণা। আমার সব কর্মকাণ্ড স্বচ্ছ।’ পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণ মামলার বিষয়ে বলেন, ‘চার্জশিটে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে আসামি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি হেসেছেন।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের এ-ব্লকের ২ নম্বর লেনের ৮ নম্বর রোডের ২ নম্বর বাড়ি, ৭ নম্বর সেকশনের ৫ নম্বর রোডের ৫৩৯ নম্বর বাড়ি, ৭ নম্বর সেকশনের ৪ নম্বর সড়কের ৬৩৯ নম্বর বাড়ি, মিল্ক ভিটা রোডের মোড়ে ৩৩/জে নম্বর বাড়ি, ৩ নম্বর লাইনের অন্ধ গলিতে দুটি প্লট, ৬ নম্বর লাইনে ৩৩৯ নম্বর প্লট ও অ্যাভিনিউ-৫-এ দোতলা বাড়ির মালিক এই বাপ্পি। তিন কাঠা থেকে সাড়ে ৯ কাঠা পর্যন্ত এসব প্লটের কোনোটিতে গড়ে উঠেছে গার্মেন্টস, কোনোটি ভাড়া দিয়েছেন, কোনোটিতে নিজে থাকেন আবার কোনোটিতে বসবাস করছেন তার লোকজন। রাজধানীর এ এলাকায় এখন প্রতি কাঠা জমির দাম সোয়া কোটি থেকে ২ কোটি টাকা।

মোরেলগঞ্জে বাপ্পির ইটভাটা : বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত ২৭টি ইটভাটার মধ্যে মেসার্স চৌধুরী অ্যান্ড খান ব্রিকস নামে অটো ব্রিকফিল্ডটির মালিকানায় আছেন বাপ্পি। প্রায় ৫০ বিঘা জমির ওপর এ ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালে। অনুসন্ধানে জানা যায়, জন্মনিবন্ধন, নির্বাচনী হলফনামা, আয়কর নথিতে বাপ্পি তার নাম মো. তাইজুল ইসলাম চৌধুরী (বাপ্পি) উল্লেখ করলেও ইটভাটার লাইসেন্সের আবেদনে নিজের নাম তাইজুল ইসলাম (বাপ্পী) উল্লেখ করেছেন।

জেলা প্রশাসনের নথি থেকে জানা যায়, লাইসেন্সের আবেদনে ঢাকা ও বাগেরহাটের দুটি ঠিকানা ব্যবহার করেছেন বাপ্পি। বাগেরহাটের ঠিকানা হিসেবে মোরেলগঞ্জের সন্ন্যাসী বাজারের পশুরবুনিয়া গ্রাম এবং ঢাকার ঠিকানা হিসেবে মিরপুর ৭ নম্বর সেকশনের ৪ নম্বর সড়কের ৬৩৯ নম্বর বাড়ির তথ্য উল্লেখ করেছেন। আয়কর নথিতে তার এ ব্যবসার তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।

এ বিষয়ে বাপ্পি বলেন, ‘ইটভাটার মালিক তিনজন। তাহলে লাইসেন্স ও ইটভাটার সাইনবোর্ডে শুধু তার নাম উল্লেখ আছে কেন—এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি বাপ্পি। বলেছেন, ‘পশুরবুনিয়ায় খুব একটা যান না। দেখভালের লোক আছে।’ এমনকি শুধু এ ইটভাটাতেই তার ২৫ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ আছে—এ প্রসঙ্গে বাপ্পি জানান, ‘বিনিয়োগ খুব বেশি না।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাপ্পির শ্বশুরবাড়ি পশুরবুনিয়া। শ্বশুরের নাম কামরুজ্জামান খান। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কাউন্সিলর। তার তত্ত্বাবধানেই ইটভাটা পরিচালিত হয়। বাপ্পির গ্রামের বাড়িও মোরেলগঞ্জের শাকিনভাঙ্গা গ্রামে। সেখানেও ৪০ বিঘার বেশি জমি আছে তার।

বাপ্পির টহল বাহিনী : সরেজমিন জানা যায়, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতিটি এলাকা টহলে নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলেছেন বাপ্পি। নাম ‘জার্সি বাহিনী’। এই বাহিনী ঝুট কাপড়, ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসা, রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা গ্যারেজে চাঁদাবাজি, ফুটপাতে অস্থায়ী বাজার ও দোকানের চাঁদা আদায় করে।

‘জার্সি বাহিনী’ ‘ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি গ্রুপ’ নামেও পরিচিত। ইকবাল, ইমন, সোহাগ, সাগর, সোহেল, সুমন, আড্ডু, সাইফুল, সুজন, জলিল, জিয়া, সোহেল, আলমগীর, শাহজাহান, রাসেল, পাপা, উমর, পারভেজ, এরশাদ, জয়, শুক্কুর, চঞ্চল, অনিক, সজল, শাহিন, বাহাদুর, সাহাব উদ্দিন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। এদের অধিকাংশই এক সময় ছাত্রদল, বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে বাপ্পির দাবি, কোনো বাহিনী বা সন্ত্রাসীর সঙ্গে যোগসূত্র নেই তার।

সরেজমিন ৬ নম্বর ওয়ার্ড : পল্লবী, বর্ধিত পল্লবী, নতুন পল্লবী, মিরপুরের ৬ ও ৭ নম্বর সেকশন, মিল্ক ভিটা রোড, সুজাতনগর, হারুনাবাদ, মল্লিকা হাউজিং, আরামবাগ, আরিফাবাদ, ছায়ানীড়, ব্লক-সি, ব্লক-ডি, ব্লক-ই, ব্লক-ট, ব্লক-ঝ, আলুব্দী, দুয়ারীপাড়া, ৬-জ, রূপনগর টিনশেড ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দ্বিতীয় পর্ব এলাকা নিয়ে গঠিত ডিএনসিসির ৬ নম্বর ওয়ার্ডটি ঢাকা-১৬ আসনের অন্তর্গত। এ ওয়ার্ডের প্রতিটি সড়ক ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর-৬ নম্বর সেকশন ও ১১ নম্বর সেকশনে পূরবী সিনেমা হলের পেছনে বেশ বড় বাজার আছে। তবে এসব বাজারের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি সড়ক ও ফুটপাতেই অস্থায়ী বাজার বসছে। আছে অস্থায়ী মাছের আড়ত, মাংস, হাঁস-মুরগি, কবুতরের দোকান। রিকশাভ্যানে কাঁচাবাজার, ফলমূল নিয়েও বসছেন অনেকে। রিকশাভ্যান, সড়ক-ফুটপাতের প্রতিটি দোকান থেকে ২০০ টাকা করে আদায় করা হয়। এসব বাজার দুপুর পর্যন্ত চলে। অস্থায়ী বাজারের টাকা সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করেন সাইফুল নামে একজন। বাপ্পির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তিনি। তবে সাইফুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রূপনগরের ঝিলপাড় বস্তির নিয়ন্ত্রক বাপ্পি: ১৯৭৩ সালে রূপনগর থানার পেছনের ঝিলের ২০ একর জমি অধিগ্রহণ করে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। সেখানে গড়ে ওঠে ঝিলপাড় বস্তি। রূপনগর আবাসিক এলাকার ট-ব্লকের মাঝামাঝি অবস্থিত এ বস্তির শিয়ালবাড়ী ও আরামবাগ দুটি অংশ। গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণের পর থেকেই স্থানীয়রা সেখানে ময়লা ফেলতে শুরু করে। কাঠের পাটাতন দিয়ে বস্তিঘর গড়ে তুলতে থাকে। ২০০০ সালে পুরো জমি বস্তিতে ভরে যায়। প্রায় আট হাজার ঘর তোলা হয়। টিনের দোতলা ঘরও আছে সেখানে। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঝিলপাড় বস্তির নিয়ন্ত্রণও হাতবদল হয়। জাতীয় পার্টি, বিএনপি-যুবদলের হাত ঘুরে ২০০৯ সালে বস্তিটির নিয়ন্ত্রণ নেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাজি রজ্জব হোসেন। ২০২০ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর ঝিলপাড় বস্তির নিয়ন্ত্রণ নেন বাপ্পি। বস্তির ভেতরে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্যাস সংযোগ। অবৈধ হলেও এই পানি, গ্যাস, বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে প্রতিটি ঘর থেকে নেওয়া হয় ২ হাজার টাকা। আর ভাড়া বাবদ নেওয়া হয় আরও ২ হাজার টাকা। বস্তিতে বাপ্পির হয়ে সব করেন দুলাল হোসেন ওরফে কারেন্ট দুলাল। বস্তির লোকজনও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এত কম টাকায় এর চেয়ে ভালো থাকার জায়গা মিলবে না বলে মনে করেন তারা।

পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি বাপ্পি : ২০২০ সালের ২৮ জুলাই রাতে কালশী কবরস্থানের কাছ থেকে রফিকুল ও শহিদুল নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, চারটি গুলি ও ওজন মাপার একটি যন্ত্র উদ্ধার করা হয়। ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে সন্দেহ হয় পুলিশের। খবর দেওয়া হয় বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটকে। পরীক্ষার সময় ঘটে বিস্ফোরণ। এতে আহত হন চার পুলিশ সদস্য ও এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট গত বছরের ২৯ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর এ মামলার চার্জশিট দেয়। এতে বাপ্পিসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। সিটিটিসি জানিয়েছে, আসামি বাপ্পি জামিনে আছেন।

বাপ্পির উত্থান যেভাবে : ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হন ড. ফখরুদ্দীন আহমেদ। এ সময় দলছুটদের নিয়ে নতুন দল গড়ে তোলেন সাংবাদিক-রাজনীতিক ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী। প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) নামে ওই দলে যোগ দেন বাপ্পির বাবা নজরুল ইসলাম চৌধুরী। মিরপুর-পল্লবীতে ঝুট মন্টু হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। পিডিপির প্রার্থী হিসেবে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে সেসবের কিছুই হয়নি। পিডিপিতে যোগ দেওয়ার আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন মন্টু। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে আবারও আওয়ামী লীগে ফেরেন।

২০০৯ সালের ২৬ মে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের নান্নু মার্কেটের সামনে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী জামিল গ্রুপের গুলিতে নিহত হন মন্টু। এর পরই পল্লবীর ‘আন্ডারওয়ার্ল্ড’ রাজনীতিতে সক্রিয় হন বাপ্পি।

বাবার মৃত্যুর পর মাত্র ২৬ বছর বয়সেই হারুন নিট, স্নোটেক্স, ইপিলিয়ন, ইভেঞ্জ, আজমত, ম্যাক্স-২০০০, শরৎ, আলানা, পূরবী অ্যাপারেলস, ডেকো ইন্টারন্যাশনাল, ইমা ক্লথসহ মিরপুর ও পল্লবী থানা এলাকার অর্ধশত গার্মেন্টের ঝুট কাপড়ের ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ নেন তিনি। এরপর প্রায় ১৫ বছর ধরে মিরপুর ও পল্লবী থানা এলাকার গার্মেন্টের ঝুট কাপড়ের ব্যবসায় একচেটিয়া আধিপত্য তার।

এক ব্যবসায়ী জানান, নামমাত্র মূল্য দিয়ে প্রতি মাসে ঝুট কাপড় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। থানা-পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কারও কাছে অভিযোগ করে কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি। উল্টো মারধরের শিকার হতে হয়েছে। বিনা টাকায় ঝুট কাপড় দিতে হয়েছে। আর কখনো কোথাও অভিযোগ করব না—এই মর্মে লিখিত দেওয়ার পাশাপাশি মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে ঘটনার সমাপ্তি টানতে হয়েছে। এই ব্যবসায়ী জানান, বাপ্পির নিয়ন্ত্রিত গার্মেন্টগুলোতে মাসে ২ থেকে ৩ কোটি টাকার ঝুট কাপড়ের ব্যবসা হয়। এ টাকার ভাগ নানা জায়গায় দিতে হয়।

তথ্য বলছে, ২০১২ সালের জুলাইয়ে ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হন বাপ্পি। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে পল্লবী থানা যুবলীগের সভাপতির পদটি বাগিয়ে নেন। আর এখন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জনপ্রতিনিধি হওয়ার পাশাপাশি দলীয় পদবি বাপ্পিকে বেপরোয়া করে তুলেছে, সরেজমিন এমন তথ্যই মিলেছে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে বাপ্পির নামও আলোচনায় আসে। ওই বছরের ১৮ নভেম্বর বাপ্পির সম্পদের হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে অবশ্য এ নিয়ে আর এগোয়নি তারা। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বচনে ডিএনসিসির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন পান রূপনগর থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন রবীন। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হন বাপ্পি। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে কাউন্সিলর প্রার্থী হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নানা কর্মকাণ্ডের জন্য বিতর্কিত এই কাউন্সিলর শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃতও হয়েছিলেন। পরে অবশ্য বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।