ছোটদের ঋণ দিতে এখনো অনীহা

ব্যাংকগুলো এসব ঋণ দিতে খুব বেশি আগ্রহী হয় না। অথচ খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য এসএমই খাতেই বেশি ঋণ বিতরণ করা উচিত।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি মো. সামীর সাত্তার বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া আরও সহজ করা প্রয়োজন। নথিপত্রের জটিলতার কারণে এসএমই উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় ঋণ নিতে পারেন না। একই সঙ্গে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে আলাদা করে বিবেচনার পরামর্শ দেন তিনি। জানা গেছে, করোনার কারণে ২০২০ সালে ব্যবসায় যে ধাক্কা এসেছিল, তা পরবর্তী এক-দেড় বছরে অনেক প্রতিষ্ঠানই সামলে ওঠে; কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ব্যবসায় আবার নতুন করে সংকট দেখা দেয়। বিশেষ করে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা পড়েছেন বেশি সমস্যায়।

তাদের সংকট সমাধানে ঋণ প্রাপ্তি যেন সমস্যা না হয় সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। করোনার প্রকোপ শুরু হলে ২০২০ সালের এপ্রিলে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করে সরকার। এসব ঋণে গ্রাহকদের সুদ দিতে হয় ৪ শতাংশ। এ ছাড়া তাদের ঋণ আদায়েও বেশকিছু ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত বছর শেষে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ২০ শতাংশের মতো। আগামী বছরেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিতরণ করা মোট ঋণের ২৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কারণ, জাতীয় শিল্পনীতিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ব্যাংক ঋণের ২৫ শতাংশ দিতে হবে এসএমই খাতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময় এসএমই উদ্যোক্তাদের বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। অনেক আগে থেকেই এ খাতের উদ্যোক্তা ও নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে ব্যাংক শাখায় বিশেষ ডেস্ক স্থাপন, কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা, ঋণের আবেদন ও জামানত সহজীকরণ, ঋণসীমা বাড়ানো উল্লেখযোগ্য। এর ফলে ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি উদ্যোক্তারা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানমুখী হয়েছেন, চড়া সুদের পরিবর্তে কম সুদে ঋণ পেয়ে ব্যবসা করতে পারছেন। জানা গেছে, এসএমই খাতে সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করে ব্র্যাক ব্যাংক। ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই বিভাগের হেড সৈয়দ আবদুল মোমেন বলেন, আমাদের ঋণের ৫৩ শতাংশই এসএমই খাতে। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে এ খাতে ২৬ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির আশা করছি। এই ঋণের চাহিদা আছে, বিতরণও ভালো হচ্ছে। আবার আদায়ও ভালো। ঋণপত্র খুলতে কিছুটা সমস্যা ও খরচ বাড়লেও এসএমই উদ্যোক্তারা ভালো করছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।