গোয়েন্দা তথ্যনেতাকর্মীদের জামাকাপড় আনতে বলেছে বিএনপি

বিএনপির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল নেতাদের কাছে বার্তা ছিল—ঢাকায় আসার সময়ে অতিরিক্ত জামাকাপড় নিয়ে আসতে হবে। সঙ্গে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে পুরোনো চাদরও। ঢাকায় মহাসমাবেশ ঘিরে জেলা ও উপজেলার নেতাদের গোপনে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। এমন নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এরপরই পুরো পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বুধবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা করণীয় ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে মিলেছে এসব তথ্য।

গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির এমন বার্তায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনে করছে, অতিরিক্ত জামাকাপড় ও চাদর নিয়ে ঢাকায় এসে বিএনপি নেতাকর্মীরা দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক দখলে নিয়ে দীর্ঘ অবস্থান নিতে পারে। এমনটি করলে জনভোগান্তির সৃষ্টি হবে। অবনতি হতে পারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও। এমন অবস্থায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপরই রাজধানী ও আশপাশের জেলাগুলোতে ধরপাকড় শুরু হয়। সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে এবং বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও সন্দেহজনক এলাকায় তল্লাশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সমাবেশে নেতাকর্মীদের আটকাতে পুলিশ তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক। ওই নেতা বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অনেকের বাড়িতে গেছে পুলিশ। সমাবেশে গেলে পরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ার দিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, ওই জেলা থেকে বিএনপি-জামায়াতের ১৮ নেতাকর্মী আটক করেছে পুলিশ। ওই সময় সাতটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করেছে। জেলা থেকে নেতাকর্মীরা যাতে সমাবেশস্থলে যেতে না পারেন, সেজন্য মঙ্গলবার রাত থেকে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। অনেকে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে আগেই রওনা হয়েছে।

বগুড়া ব্যুরো জানায়, ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দিতে অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মী বগুড়া থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকেই পুলিশি ঝামেলা এড়াতে আগেই রওনা হয়েছেন। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম খায়রুল বাসার বলেন, ঢাকায় সমাবেশে যাতে যোগ দিতে না পারে সেজন্য পুলিশ পরিবহন বন্ধ করতে পারে—সেই শঙ্কায় আগেই নানা উপায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা ঢাকার পথে রওনা দিয়েছেন। সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেল বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই হয়রানি করতে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করছে। ঢাকায় পৌঁছানোর পরও গ্রেপ্তার করছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।