জাতির পিতার ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তিসেই আব্বাসকে পুনর্বহালে আ.লীগ নেতার তৎপরতা

বঙ্গবন্ধুকে খুশি করতে গিয়ে আল্লাহকে নারাজ করব নাকি। মানুষকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে, আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করা যাবে না।’ রাজশাহী সিটি ফটকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে এমনই কটূক্তি করেছিলেন কাটাখালীর সাবেক পৌর মেয়র মো. আব্বাস আলী। এ মন্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি মেয়রের দায়িত্ব থেকেও তাকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হয়। এবার সেই আব্বাসকে স্বপদে পুনর্বহালে তৎপরতা চালাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলটির এক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। ওই নেতার ইশারায় ইতোমধ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন আব্বাস। অথচ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না এক মামলার বাদী!

জানা যায়, এই ‘বিতর্কিত’ ব্যক্তিকে পুনর্বহাল করতে ওই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বাগিয়ে নিয়েছেন মোটা অঙ্কের টাকা। এই লেনদেনের বিষয়ে অবগত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের পুত্র রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে নিয়েও আব্বাসের ‘কুরুচি ও কটূক্তিমূলক’ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।

লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পৌর শাখা-২-এর উপসচিব স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে আব্বাস আলীকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর ওই বছরের ১ ডিসেম্বর রাজধানীর কাকরাইলের ইশা খাঁ হোটেল থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় র্যাব সদস্যরা আব্বাস আলীকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহীতে নিয়ে আসেন। তারপর থেকে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। এক বছর কারাভোগের পর ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান।

জানতে চাইলে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম বলেন, ‘আব্বাসের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে দুটি মামলা বিচারাধীন ছিল। পরে সাক্ষী-প্রমাণ সব কিছু শেষ হওয়ার পর মামলাটি শেষ হয়ে গেছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জনি নিজেও সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। তিনি যেভাবে সাক্ষ্য দিতে চেয়েছেন, সেভাবেই নেওয়া হয়েছে।’

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘জাতির পিতাকে নিয়ে কটূক্তিকারী আব্বাস কোনোভাবেই পার পেতে পারে না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে কটূক্তি করতে পারে, তাকে যদি কেউ আবার স্বপদে পুনর্বহাল করতে জোর তদবির চালায়, তাহলে কিছু বলার নেই। এটি খুবই দুঃখ ও হতাশাজনক।’

এ ব্যাপারে জানতে আব্বাসকে ফোনে কল করা হলে তিনি বিস্তারিত বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘মেয়র পদ ফিরে পেতে চেষ্টা অব্যাহত আছে, দেখা যাক কী হয়।’

মেয়র আব্বাসকে স্বপদে পুনর্বহালের চেষ্টাকারী আওয়ামী লীগের সেই সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় এ ব্যাপারে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।