স্বার্থ হাসিলের জন্য দেশকে ধংস করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি’

গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, বাক স্বাধীনতাকে বাধা দেওয়া হলে গণতন্ত্র থাকতে পারে না। সাইবার সিকিউরিটি আইনে যে কোনো সংবাদকেই সরকার রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে গণ্য করতে পারবে বলেও মনে করেন সাবেক এই মন্ত্রী।

গতকাল বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দলের চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পেশাজীবী সমাজের এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করতে পারবে সাইবার সিকিউরিটি আইনে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন গণমাধ্যমে সেলফ সেন্সরশিপ চলছে, আগামীতে কোনো সেন্সর দরকার হবে না। কারণ, গণমাধ্যম কোনো সংবাদই করতে পারবে না। এতে সব নিউজ চ্যানেল বন্ধ হবার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে।

বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্রের অভাব মন্তব্য করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র চর্চার পরিবেশ নেই। দেশ এখন একদলীয় শাসনব্যবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে মানুষের বাক স্বাধীনতা, ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে সরকার যে কোনো কাজকেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে পারবে। মালিক হিসেবেই জনগণ যদি সরকারের সমালোচনা করতে না পারেন, তাহলে সরকার রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কাজ করলে তা ঠেকানোর উপায় কী? জনগণ যদি সরকারের সমালোচনা না করতে পারে সেখানে আর গণতন্ত্র থাকতে পারে না।

জাতীয় পেশাজীবী সমাজের সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরাও শংকিত। দুটি পক্ষ যেভাবে শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের মাঝে সহিংসতার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। দুটি দল মুখোমুখি হলেই বড় ধরনের সহিংসতা হতে পারে। দেশ ও জাতি ধংসের পথে চলে যেতে পারে। দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে। জেদ ও স্বার্থ হাসিলের জন্য দেশকে ধংস করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি।

বর্তমান সরকার রাষ্ট্রকে নিজস্ব ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করছে এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র, সরকার এবং দল যখন এক হয়ে যায় তখনই একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু হয়ে যায়। সরকারি কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সরকারি দলের পক্ষে কথা বলছে। তাই, সরকারি কর্মকর্তা, সরকারি দলের নেতাকর্মী এবং মন্ত্রীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তাই সামনের দিকে কঠিন সংগ্রাম অপেক্ষা করছে, আমাদের সেই সংগ্রামে জিততে হবে। আমরা কারো পক্ষ বা বিপক্ষ নয়, আমরা জনগণের পক্ষের শক্তি।

সভায় বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।